আমরা জানি যে আমাদের শরীর ও মন এই দুয়ের উপরেই যোগের প্রভাব অপরিসীম। যোগাসন মানসিক জড়তা ও অবসন্ন ভাব কাটাতে অনেক কার্যকরী একটি উপায়। যোগাসনের মাধ্যমে রাগ, চঞ্চলতার মতো মনের বেশ কিছু অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
তাই আপনি যদি নিজেকে সুস্থ এবং মানসিক ভাবে শক্তিশালী হিসাবে গড়ে তুলতে চান তাহলে আপনার জন্য যোগ ব্যায়ামের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। চলুন তাহলে দেরি না করে এখন জেনে নেওয়া যাক যে কেনো আপনি সুস্থ থাকার জন্য যোগ ব্যায়ামকে বেছে নিবেন সেই সম্পর্কে।
শরীরচর্চার মাধ্যম হিসেবে যোগাকে বেছে নেওয়ার কারণগুলি হল:
- আমরা জানি যে যোগ ব্যায়াম হচ্ছে এক মাত্র প্রাকৃতিক উপায় যা আমাদের শারীরিক গঠন ঠিক করে এবং পুরো শরীর জুড়ে কাজ করে থাকে।
- আপনি যদি নিয়মিত ভাবে যোগ ব্যায়াম অনুশীলন করে থাকেন তাহলে অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরাতে আপনাকে অনেক বেশি কাজে দিবে।
- আপনি চাইলে নিজেকে ফিট রাখার জন্য যোগ ব্যায়াম যেকোনও জায়গায় এবং যেকোনও সময় করে নিতে পারেন। এর জন্য কোনও নিদিষ্ট জায়গা বা সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়না।
- আপনি যদি নিয়মিত যোগাভ্যাস ফলো করে থাকেন তাহলে এটি আপনার মন এবং শরীরের উপর সম্পূর্ণ সঠিক নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে যা রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষায় নিজের শক্তি ও দুর্বলতা নির্ণয়ের প্রয়োজন কেন
যেসমস্ত রোগ কমাতে যোগাসন সবচেয়ে উপকারী
শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা
আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগেন। এই জাতীয় সমস্যার মোকাবিলায় যোগ ব্যায়াম খুবই কার্যকরী। মেরুদণ্ড সোজা রেখে পা গুটিয়ে বসে ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে।
এটি দেখতে অনেকটা পদ্মাসনের মতোই। যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় সেই সঙ্গে ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও বাড়ে।
আরও পড়ুনঃ বডি ফিটনেস ঠিক রাখার উপায়
হজমের সমস্যার সমাধান
হজমের সমস্যা কমাতে আপনি চাইলে খোলা আকাশে নিচে বসে মুক্ত বাতাসে বসে যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। পবন মুক্তাসনে চিৎ হয়ে শুয়ে প্রথমে ডান পা ভাঁজ করে পেটের সঙ্গে লাগাতে হবে। বাঁ পা তখন সোজা থাকবে।
তাঁরপরে একই ভাবে আপনার বাঁম পা ভাজ করে পেটে লাগতে হবে। ডান পা তখন সোজা থাকবে। গ্যাস, অম্বল, হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমিয়ে খিদে বাড়ায়।
হাঁটুর ব্যথা
হাঁটুর ব্যথা কমানোর জন্য উত্থানপদাসন করলে উপকার মিলবে। চেয়ারে বসে পা তোলা ও নামানো অর্থাৎ সিটেড লেগরাইজ বা পেলভিস ব্রিজ (চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে উপরের দিকে তোলাকে পেলভিস ব্রিজ বলা হয়) করা যেতে পারে। এতে থাইয়ের পেশি সংকুচিত বা প্রসারিত হয়।
কোমরের যন্ত্রণা
কোমরের যন্ত্রণা কমাতে আপনি চাইলে উপুড় হয়ে শুয়ে একটা পা উপরে তুলে একপদ সলভাসন বা পবনমুক্তাসন করলেও ভাল ফল পাওয়া যাবে।
ঘাড়ের যন্ত্রণা
ঘাড়ের যন্ত্রণার জন্য আইসোমেট্রিক প্রেসার অভ্যাস করলে ফল মিলবে। দু’হাত মাথার পিছনে নিয়ে মাথাকে হাত দিয়ে ঘাড় সোজা করে চাপ দিতে হবে।
এ ভাবে মাথাকে চার দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চাপ দিতে হবে। চিৎ হয়ে শুয়ে (ভুজঙ্গাসন) থেকে চিবুকে হাত দিয়ে চাপ দিলেও ঘাড়ের উপর চাপ পড়ে।
পেট ও নিতম্বের চর্বি কমাতে
অতিরিক্ত চর্বি আমাদের দেহের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর, তাই পেট ও নিতম্বের চর্বি কমাতে চাইলে আপনি যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। মাটিতে বসুন এরপর হাত দুটি সোজা করে মাথার ওপরে তুলে জড়ো করুন। পেট ও বুক যেন ঊরুর সঙ্গে লেগে থাকে। এই অবস্থায় মনে মনে কুড়ি পর্যন্ত গুনুন। ধীরে ধীরে সোজা হয়ে বসে শবাসনে বিশ্রাম নিন।
0 Comments