ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করার নিয়ম / Traffic fine payment Bangladesh

ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করার নিয়ম Traffic fine payment Bangladesh

বাইক বা গাড়ি যেটাই হোক না কেন রাস্তায় বাহির করলে প্রয়োজন সঠিক কাগজপত্র। সঠিক কাগজপত্র না থাকলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ট্রাফিক পুলিশের কাছে। 

কাগজপত্রের কোন ত্রুটি থাকলে ট্রাফিক জরিমানা দিতে হয়। এছাড়াও ট্রাফিক আইন অমান্য করে চলাফেরা করলেও ট্রাফিক ফাইন বা জরিমানা দিতে হয়। ট্রাফিক ফাইন দেওয়ার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করার নিয়ম/Traffic fine payment Bangladesh সকলের জেনে থাকা প্রয়োজন।

রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে যদি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করেন তাহলে ট্রাফিক পুলিশ আপনাকে একটি জরিমানার কাগজ বা চালানম দেবে। সেখানে উল্লেখ থাকবে কোন কারনে আপনাকে ফাইন করা হয়েছে। এবং কত টাকা ফাইন করা হয়েছে সেটা উল্লেখ থাকবে। আপনি ইচ্ছা করলে খুব সহজে ফাইনের টাকা অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারেন।

    ট্রাফিক আইন কি?

    সড়ক কথা বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। এই যানবাহন চলাচল করার সময় চালকদের যে নিয়ম মেনে চলতে হয় তাকে ট্রাফিক আইন বলে। ট্রাফিক আইন বিভিন্ন এলাকা ভেবে আলাদা।

    আরও পড়ুনঃ এটিএম বুথে কার্ড আটকে গেলে করণীয় / এটিএম কার্ড ব্যবহারের নিয়ম

    কারণ শহর অঞ্চলে যানবাহন বেশি চলে এ কারণে এখানে ট্রাফিক আইন থাকে। কিন্তু ট্রাম অঞ্চলে কোন ধরনের ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হয় না। কারণ সেসব এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ থাকেনা।  

    ট্রাফিক সিগনাল কাকে বলে?

    সহজ ভাবে বলতে গেলে, ট্রাফিক সিগন্যাল হলো এমন এক ধরনের বিশেষ ব্যবস্থা যার মাধ্যমে সকল ধরনের জান বহন চলাচল করার বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী চালক রাস্তায় যান বহন চালিয়ে থাকে। 

    যেমন ধরুন আপনি রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছেন হঠাৎ করে দেখলেন সিগনাল লাল হয়ে গেছে। তাহলে সাথে সাথে আপনাকে গাড়ি থামিয়ে দিতে হবে। যদি সেখানে গাড়ি না থামান তাহলে ট্রাফিক আইন মোতাবেক আপনাকে ট্রাফিক ফাইন দিতে হবে। 

    এই কারণে রাস্তায় সঠিকভাবে গাড়ি চলাচলের জন্য ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের প্রতিটি দেশে ট্রাফিক সিগন্যাল রয়েছে।

    ট্রাফিক সিগনাল কতটি?

    ট্রাফিক সিগন্যালের মাধ্যমে গাড়ির চলাচল এবং গাড়ির গতিবেগ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ট্রাফিক সিগন্যাল না থাকলে রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে গাড়ি পারাপারের সময় এক্সিডেন্ট হয়ে থাকে। 

    এসব কারণে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়। ট্রাফিক সিগন্যাল সাধারণত তিন প্রকার। যেমন: বাহুর সংকেত, আলোক সংকেত এবং শব্দ সংকেত।

    বাহুর সংকেত:

    বাহু শব্দের অর্থ হাত। হাতের মাধ্যমে যেসব ট্রাফিক সিগনাল নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাকে বাহুর সংকেত বলা হয়। এই সিগনাল পুলিশ কর্মকর্তা, ট্রাফিক পুলিশ, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কারী ব্যক্তি এবং যানবাহন স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি অফিসার এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তারা হাতের মাধ্যমে রাস্তার সিগন্যালগুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

    আলোক সংকেত:

    অলক সংকেত বা ট্রাফিক লাইট সিগন্যাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় লাল, সবুজ ও হলুদ আলো। এই সংকেত গুলো বৈদ্যুতিক ডিভাইসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ল্যাম্পপোস্টের মাধ্যমে আলোগুলো স্থাপন করা হয়ে থাকে।

    শব্দ সংকেত:

    রাস্তায় বাহু সংকেত ও আলো সংকেতের পাশাপাশি শব্দ সংকেত রয়েছে। এসব সংকেত রাস্তার পাশে বিভিন্ন সাইন বোর্ডের মাধ্যমে উল্লেখ করা থাকে। এগুলো হচ্ছে বিভিন্ন তথ্যমূলক সংকেত এবং রাস্তার দিক নির্দেশনা। বর্তমান সময়ে  শব্দ সংকেত প্রায় দেড়শো বেশি রয়েছে। এসব সংকেত রাস্তায় থাকলেও গাড়ি চালক এরা তেমন লক্ষ্য করেনা।

    শব্দ সংকেত:


    ট্রাফিক চিহ্ন কি?

    ট্রাফিক চিহ্ন বা সংকেত কি? রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় রাস্তার পাশে যেসব চিহ্ন বা সংকেত দেওয়া থাকে সেগুলোতে ট্রাফিক চিহ্ন বলা হয়। এই ট্রাফিক চিহ্ন গুলো রাস্তার পাশে সাইনবোর্ডের মাধ্যমে লাগানো থাকে। এই চিহ্নগুলো রাস্তার সঠিক ম্যাপ উল্লেখ করা থাকে। 

    আরও পড়ুনঃ নতুন ব্যবসার আইডিয়া বা হালাল ব্যবসার আইডিয়া

    বিশ্বের প্রতিটি দেশেই এই ট্রাফিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসবের মাধ্যমে রাস্তার সঠিক নির্দেশনা এবং কোথায় কোন ধরনের ভাজ রয়েছে সঠিক নির্দেশনা পাওয়া যায়। এই চিহ্ন গুলো চালককে গাড়ি চালাতে সাহায্য করে।

    ট্রাফিক আইন কত প্রকার:

    উপরের আলোচনা থেকে আমরা আগে জেনেছি ট্রাফিক আইন কাকে বলে? কিন্তু আমরা ট্রাফিক আইন কত প্রকার সেটা জানিনা। যদিও ট্রাফিক আইন অনেক। ট্রাফিক আইনের কিছু প্রকার রয়েছে। সাধারণভাবে আমরা দেখতে পাই দুই ধরনের।
    1. ডানদিকগামী ট্রাফিক আইন সমূহ
    2. বামদিকগামী ট্রাফিক আইন সমূহ
    সাধারণত সবার এই ট্রাফিক ফাইন মেনে চলতে হয়। সাধারণভাবে চিন্তা করলে আমরা এই দুই ধরনের ট্রাফিক আইন দেখতে পাই। এছাড়াও ট্রাফিকের বিশেষ কিছু আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। তার মাধ্যমে চালকের জরিমানা করা হয়ে থাকে।

    ট্রাফিক আইন ভাঙলে কোন অপরাধে জরিমানা কত?

    ট্রাফিক আইন এর মাধ্যমে রাস্তার গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে গাড়ি চালাতে হলে কিছু নিয়মকানুন রয়েছে যেগুলো ভঙ্গ করলে জরিমানা বা ফাইন দিতে হয়। এছাড়াও গাড়ি চালাতে হলে অবশ্যই গাড়ির কাগজ থাকতে হবে। চলুন জেনে নেই, ট্রাফিক আইন ভাঙলে কোন অপরাধে জরিমানা কত?
    1. যদি আপনার গাড়িতে কোন নিষিদ্ধ হর্ণ ব্যবহার করেন তাহলে আপনাকে ট্রাফিক আইন এর ১৩৯ ধারার অপরাধে ১০০ টাকা ফাইন দিতে হবে।
    2. নির্ধারিত গতির তুলনায় আপনি যখন অতিরিক্ত গদিতে গাড়ি চালাবেন তার জন্য আপনার ৩০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। যদি পুনরায় একই অপরাধ করেন তাহলে ৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
    3. যদি আপনি ওয়ান ওয়ে রাস্তার মধ্যে বিপরীত পাশে উল্টোদিকে গাড়ি চালান তাহলে ২০০ টাকা ফাইন দিতে হবে।
    4. যদি গাড়ি চালানোর সময় নিরাপত্তাহীন ভাবে গাড়ি চালান তাহলে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
    5. যে সকল গাড়ি থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় কালো দাগ বের হয় তাদেরকে ২০০ টাকা জরিমান দিতে হয়।
    6. আপনি যদি বীমা ছাড়া গাড়ি চালান তাহলে ৭৫০ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
    তবে এই জরিমানার পরিমান কম বেশি হতে পারে। কারণ ট্রাফিক আইন পরিবর্তনশীল।

    ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করার নিয়ম:

    প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে ট্রাফিক পুলিশের হাতে ধরা খেলে ট্রাফিক ফাইন প্রদান করতে হয়। এ টাকা পেমেন্ট করার জন্য কোর্টে যেতে হয়। এবং কেস নম্বর অনুযায়ী টাকা পেমেন্ট করে আসতে হয়। 

    আরও পড়ুনঃ কেন আমাদের শক্তি এবং দুর্বলতা জানা উচিত?

    টাকার রিসিভ রিসিভ জমা দিলে তারপরে গাড়ি পাওয়া যায়। কোট গেলেও অনেক সময় সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল নিতে হয়। তারপরে ট্রাফিক ফাইন দেওয়া যায়। বর্তমান সময়ে অনলাইনে মাধ্যমে ট্রাফিক ফাইন পরিশোধ করা যাচ্ছে। এতে করে ভোগান্তি অনেকাংশে কমে গিয়েছে।

    অনলাইনে ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করার নিয়ম:

    বর্তমান সময়ে সব কিছু অনলাইন ভিত্তিক হয়েছে। যার ফলে মানুষের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে গিয়েছে। এবং কাজ করতে কোন ধরনের ঘুষ দিতে হয় না। বর্তমানে অনলাইনে ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করা যাচ্ছে। 

    বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির কাগজ ছাড়া গাড়ি চালালে ট্রাফিক আইন অনুযায়ী আপনাকে ফাইন করা হয়। এই জন্য আপনাকে ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট না করলে অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। বর্তমান সময়ে খুব সহজেই অনলাইনে মাধ্যমে ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করতে পারবেন।

    অনলাইন ভিত্তিক ট্রাফিক ফাইল পেমেন্ট করার উপায় হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করা যায়। এর জন্য সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হচ্ছে উপায় অ্যাপস। উপায় অ্যাপস এর মাধ্যমে সকল ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া যায়। 

    উপায় অ্যাপস এ ট্রাফিক ফাইন নামের একটি অপশন রয়েছে। সেখানে গিয়ে ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করতে পারবেন। উপায় অ্যাপস এর ট্রাফিক ফাইন অপশন এ গেলে সকল ধরনের নির্দেশনা সেখানেই পাবেন। এই অ্যাপসের কারণে মানুষের ভোগান্তি অনেকাংশেই কমে গিয়েছে।

    শেষ কথা: ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করার নিয়ম/Traffic fine payment Bangladesh

    প্রতিটা মানুষের জন্য ট্রাফিক ফাইন প্রেমেন্ট করা জরুরী। কারণ ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট না করলে আপনার লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে। এছাড়াও গাড়ি অনেক সময় সাথে নিয়ে চলে যায়। এবং গাড়ির উপর কেস করে দেয়। 

    যার ফলে টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। এবং অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এসব সমস্যার সমাধানের জন্য ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করা জরুরী। বর্তমানে খুব সহজেই ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করা যায়। কাজটি সহজ হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধার কারণে। 

    এখন ঘরে ঘরে বা যেকোন স্থান থেকেই যে কোন মুহূর্তে ট্রাফিক ফাইন পেমেন্ট করা যায়। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

    Post a Comment

    0 Comments